অন্ডকোষ

ছেলেশিশু জন্মের পর সাধারণত দুটি অণ্ডকোষ (টেস্টিস) তার অণ্ডথলিতে অবস্থান করে। যদি জন্মের পর অণ্ডথলিতে অণ্ডকোষ অনুপস্থিত থাকে, তাকে আনডিসেন্ডেড টেস্টিস বা ক্রিপটোরকিডিজম বলা হয়। যেসব শিশু ৩৭ সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার আগে জন্মায় এবং ওজন দেড় কেজির নিচে হয়, তাদের ক্ষেত্রে এই রোগের আশঙ্কা ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ বেশি। আনডিসেন্ডেড টেস্টিস এক পাশে বা উভয় পাশেই হতে পারে। তবে এক পাশে হওয়ার হার অনেক বেশি (৯০ শতাংশ)।

কেন হয়?

ভ্রূণাবস্থায় যখন গর্ভস্থ শিশুর অণ্ডকোষ তৈরি হয়, তখন আসলে তা পেটের ভেতরে থাকে। ক্রমান্বয়ে অণ্ডকোষ পেট থেকে নিচে নামতে থাকে। ভ্রূণের বয়স ৯ মাস পূর্ণ হলে অণ্ডকোষ অণ্ডথলিতে নেমে আসে। পেটের ভেতর থেকে অণ্ডকোষটি নামতে হরমোন ও অন্যান্য কিছু বিষয় কাজ করে। এ প্রক্রিয়া যখন ব্যাহত হয়, অণ্ডকোষটি যথাসময়ে অণ্ডথলিতে পৌঁছাতে পারে না।

কখন এবং কেন ডাক্তারের কাছে যাবেন?

ছেলেশিশু জন্মের পর যদি অণ্ডকোষ অণ্ডথলিতে না পাওয়া যায়, তবে অবশ্যই ব্যাপারটিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। তবে বেশির ভাগ সময় তিন মাসের মধ্যে অণ্ডকোষ স্বাভাবিকভাবেই নেমে আসে। তিন মাস পরও যদি সমস্যা থেকে যায়, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। বাচ্চার বয়স এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই এই রোগের চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন।

সময়মতো চিকিৎসা না করালে কী কী সমস্যা হতে পারে?

শিশুর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অণ্ডকোষ থেকে শুক্রাণু তৈরির হার কমে যায়, শুক্রাণুর গুণগত মান হ্রাস পায় ও অণ্ডকোষের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। পরে তারা প্রজনন সমস্যায় ভুগতে পারে।
অণ্ডকোষ হঠাৎ পেঁচিয়ে যেতে পারে, এতে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে অণ্ডকোষটি মরে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই পেঁচিয়ে যাওয়ার সমস্যা ‘টেস্টিকুলার টরসন’ নামে পরিচিত। এতে চিকিৎসার অংশ হিসেবে আক্রান্ত অণ্ডকোষটি ফেলে দিতে হতে পারে।
আক্রান্ত অণ্ডকোষে ক্যানসার হতে পারে। ক্যানসার নির্ণয়ে বিলম্ব হলে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে ।