২৬ শে মার্চ এর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য

প্রিয় পাঠক, স্বাগত “২৬ শে মার্চ এর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য এবং ২৬ শে মার্চ নিয়ে কিছু কথা” শিরোনামের আজকের পোষ্টে।আপনি যদি একজন দেশ প্রেমিক হয়ে থাকেন তাহলে আজকের পোস্টটি জানার জন্য হলেও আপনার সম্পূর্ণ পড়া উচিত। ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে অনেকের বিভিন্ন ষ্টেজে বক্তব্য দিতে হয়। এজন্য আবার ২৬ শে মার্চ নিয়ে কিছু কথা নিজের মধ্যে আয়ত্ত করতে হয়।

২৬ মার্চ এর উৎপত্তি । ২৬ শে মার্চ কেন স্বাধীনতা দিবস

ঘটনা শুরু ভারত বর্ষ ভাগ হওয়ার পর থেকে। পাকিস্তান যখন দুইত ভাগে হয়ে গেলো একটি পশ্চিম পাকিস্তান অন্যটি পূর্ব পাকিস্তান তথা আজকের বাংলাদেশ।  পাকিস্তানের দুইটি অংশেরই সকল ক্ষমতা ছিলও পশ্চিম পাকিস্তানের হাতে। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে দিয়ে হুকুম করে সবকিছু উৎপাদন করিয়ে পশ্চিম পাকিস্তান সরকার তার দেশে নিয়ে যেতে শুরু করে।চাকরি থেকে শুরু করে ভাষা, সুযোগ সুবিধা, পড়াশোনা এবং উন্নয়ন সহ সব ধরনের কাজে পাকিস্তান সরকার তথা পশ্চিম পাকিস্তানে অবস্থান রত সরকার পূর্ব পাকিস্তানের জনগনের সাথে বৈষম্য গড়ে তোলে।

এসব অন্যায় অত্ত্যাচার সহ্য করতে করতে গোটা পূর্ব বাংলার জনগন যখন দুর্বিষহ অবস্থায় পরে যায় তখন সাল ১৯৫২।মাতৃভাষা উর্দু হবে এমন কথার ঘোর প্রতিবাদ করেন পূর্ব বাংলার ছাত্ররা।এরপর ১৯৬৬ এর ৬ দফা, ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান ১৯৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী মুসলিম লিগের নিরিঙ্কুশ বিজয়ের পরেও পশ্চিম পাকিস্তান সরকারের ক্ষমতা হস্তানান্তর না করা। যখন ক্ষমতা দিতে পশ্চিম পাকিস্তান সরকার টালবাহনা শুরু করেন তখন গোপনে তারা পূর্ব পাকিস্তানের উপর হামলার ষড়যন্ত্র করেন।ই ষড়যন্ত্র টের পায় বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিব সহ তার নেতারা। যখন মনে হলও যে যেকোনো সময়ে পশ্চিম পাকিস্তান বাঙ্গালীদের উপর হামলা চালাতে পারেন তখন বঙ্গবন্ধু পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়াই ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন।

ভাষণে তিনি সিস্টেমেটিক ভাবে বাংলার জনগণকে এক হয়ে যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত হতে বলেন।এজন্য তিনি বাঙ্গালীদের প্রতি পাকিস্তান সরকারের অন্যায়, শোষণ, নির্যাতন এবং বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরেন।একই সাথে তিনি বলেন যে, তিনি হুকুম দেওয়ার না পারলেও পরিস্থিতি বুঝে যুদ্ধ শুরুর আদেশ দিয়ে সেদিনের বক্তব্য শেষ করেন।এরপর ২৫ মার্চ কালও রাতের অর্থাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে যখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনি ঘুমন্ত বাঙ্গালির উপর নির্মম ভাবে গুলিবর্ষণ শুরু করে তখন রেডিও যোগে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। সেই ২৬ মার্চ থেকেই দেশ স্বাধীনের যুদ্ধ শুরু হয়। এজন্য ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস। এবং এভাবেই ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস এসেছে।

২৬ মার্চ এর বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম

প্রিয় পাঠক, ২৬ শে মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। বরাবরের মতো এবারও (২৬ মার্চ ২০২৩) দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত সহ সবজায়গায় মহান স্বাধীনতা দিবস পালিত হবে। কোরআন তেলাওয়াত, উপস্থিত বক্তৃতা এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। ২৬ মার্চে বিভিন্ন জায়াগায় অনুষ্ঠিত এসব আয়োজনে আমাদের অনেকের উপস্থিত বক্তৃতা দিতে হয়।অনেক সময় বিভিন্ন নির্দিষ্ট বিষয়ের উপরে বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন ও করা হয়।

তাই এইসব জাতীয় দিবসে আয়োজিত কোনও প্রোগ্রামে বক্তৃতা দেওয়ার আগে অনেকগুলি বিষয়ে জানতে হয়।জানতে হয় সাজিয়ে গুছিয়ে শুরু থেকে শেষ সংক্ষিপ্ত আকারে সম্পূর্ণ বিষয়কে তুলে ধরার। এর কারণ, আপনি জনসম্মুখে কথা বলবেন আপনার বক্তৃতার মাধ্যমে। কিন্তু, আপনি যে বিষয়ে কথা বলবেন সেই বিষয়কে গুছিয়ে অল্প কথার মধ্যে সবার সামনে সঠিক তথ্য দিয়ে উপস্থাপন করতে না পারেন তাহলে জনগণ আপনার বক্তৃতা শুনবে কেন?

প্রিয় পাঠক, আপনি যখন ২৬ শে মার্চ এর বক্তব্য অর্থাৎ ২৬ শে ম আরচ এর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিবেন তখন নিশ্চয়ই আপনার বাংলাদেশের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ইতিহাস টুকু আগে নিজে জানতে হবে।

কারণ, মুখস্ত করে কোনোদিন সংক্ষিপ্ত বক্তব্য বা উপস্থিত বক্তব্য দেওয়া যায় না।

যেমন ধরুন, আপনি যদি ২৬ শে মার্চ উপলক্ষে বক্তব্য দিতে চান, তখন আপনার শুরু করতে হবে ১৯৪৭ সাল থেকে। ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ পর্যন্ত দেশের ইতিহাসে যত উল্লেখযোগ্য ঘটনা আছে তা ২ থেকে ৩ বা ৪ লাইনের মধ্যে তুলে ধরতে হবে। এরপর ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ এর পর থেকে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর অর্থাৎ দেশের বিজয় অর্জন

২৬ শে মার্চ সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেওয়ার একটি নমুনা বক্তব্য

এবার আপনি বলুন, ২৬ শে মার্চ এর বক্তব্য কি মুখস্ত করে দেওয়া সম্ভব?

অবশ্যই না। আপনি যদি জনসম্মুখে উপস্থিত ভাবে খুব সুন্দর একটি ২৬ শে মার্চ এর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন তাহলে এশের স্বাধীনতার ইতিহাস সম্পর্কে যথেষ্ট পূর্ব জানাশোনা থাকতে হবে। তবে স্বাধীনতার এত বছর পরে এসে দেশের স্বাধীনতা ইতিহাস সম্পর্কে সবাই ই অবগত।

তাই আপনার দরকার শুধু একটু সাজিয়ে গুছিয়ে ভিত্তি নিয়ে জনসম্মুখে মানুষের সামনে ২৬ শে মার্চ এর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেওয়া। সাজিয়ে গুছিয়ে একটি উপস্থিত বক্তব্য আমাদের প্রকাশ করা আছে।

যেখানে  বক্তব্য দেওয়ার আগে কি করনীয় বক্তব্য দেওয়ার সময় লক্ষণীয় বিষয় সমূহ সহ একটি চমৎকার নমুনা বক্তব্য দেওয়া আছে।

২৬ শে মার্চ সংক্ষিপ্ত বক্তব্য

শুরু করছি মহান আল্লাহর নামে।

উপস্থিত আমার শিক্ষক, গুরু জনদের প্রতি আমার সালাম এবং স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা।

আজ, ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস। আজকের এই দিনে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে প্রান হারানো সকল শহীদদের।

একই সাথে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি ভাষা আন্দোলন এবং বিভিন্ন সময়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া সকল বির শহীদদের প্রতি।

১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট যখন পাকিস্তান এবং ভারত আলাদা হয়ে যায় তখন তৎকালীন পাকিস্তানকে দুইটি ভাগে ভাগ করা হয়। তখন পূর্ব পাকিস্তান – ই আজকের বাংলাদেশ।

দেশ স্বাধীনের সুধু শুরু ১৯৮৭ সালের ১৬ আগস্ট থেকেই। এরপর ভাষা আন্দোলন সংগঠিত হয় ১৯৫২ সালে।

এরপর ৬৬ এ ৬ দফা আন্দোলন হয়। ৬৯ এর এর গণঅভ্যুত্থান এবং ৭০ এর সাধারণ নির্বাচন।

এর প্রত্যেকটি ছিলও দেশ স্বাধীনের একেকটি সার্থক পদক্ষেপ।

১৯৭ এর নির্বাচনে আওয়ামী মুসলিম লীগ বিজয় অর্জন করলেও পশ্চিম পাকিস্তান সরকার যখন ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু করেন তখন বঙ্গবন্ধু সহ সকলে বুঝে যায়।

এরপর ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দান বর্তমান সোহ্‌রাওয়ার্দী উদ্যানে ১৮ মিনিটের একটি ভাশন দেন জাতির উদ্দেশ্যে।

এরপর-ই মূলত বাংলার আপামর জনসাধারন মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু অরেন।

এরপর ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ যখন পশ্চিম পাকিস্তান সরকার দেশের ঘুমন্ত নিরীহ মানুষের উপর হামলা চালান তখন রেডিও যোগে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে দেন।

এরপর ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু আটক হলে দেশের জনগন সেই মুহূর্তে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পরে।

এরপরের ঘটনা আমাদের সবার জানা। নানান বাধা বিপত্তি পেরিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা মহান বিজয় অর্জন করি।

বাংলাদেশ নামের একটি নতু রাষ্ট্রের জন্ম হয়।